মোটরসাইকেল ধৌত করার সর্বোত্তম ১০টি টিপস।

 মোটরসাইকেল ধৌত করার সর্বোত্তম ১০টি টিপস।

 

আমি আমার মোটরসাইকেলটিকে ধোয়ার চেয়ে বেশি চালাতে চাই, কিন্তু কোন সাপ্তাহিক ছুটিতে দীর্ঘ সময় চালানোর পর এটিকে পূর্বের মত সুন্দর অবস্থায় নিয়ে আসা হাস্যকর কাজ হয়ে উঠে। তাই আজ আমি আপনাদের মোটর সাইকেল ধোয়ার কতগুলো টিপস দিব।

washing-motorcycle-productreviewbd

১. প্রস্তুতিই হল আসল

ট্যাঙ্ক ব্যাগ, মালপত্র ও অন্যান্য জিনিসগুলো সরিয়ে ফেলুন যাতে এগুলো না ভিজে। এখন আপনার ধোয়ার ও পরিষ্কার করার জিনিসগুলো প্রস্তুত করুন। আপনার একটি বালতি, সাবান ও লিকুইড ডিটারজেন্ট, পোকামাকড় ও আলকাতরা পরিষ্কারক, ডিগ্রিসার ও ইঞ্জিন ক্লিনার, টুথব্রাশ, WD40, হুইল পরিষ্কার করার জন্য একটি ব্রাশ, টায়ার ক্লিনার, রং পালিশ, মেটাল পালিশ, কমপক্ষে দুইটি ছোট নরম আশজাতীয় নেকড়া, ১০০% কটন স্পঞ্জ, বিভিন্ন নরম কটন অথবা ছোট আশজাতীয় নেকড়া, শক্ত জিনিসপত্র ঘষার নেকড়া ও শুকানোর জন্য মোটা কাপড় প্রয়োজন হবে।

Related  নুতন মোটরবাইক কেনার ১0 টি অত্যাবশ্যক টিপস

২. কখন এবং কোথায় আপনি বাইকটি ধুচ্ছেন সেটাও গুরুত্বপূর্ণ-

টাকা দিয়ে কোন গ্যারেজ থেকে ধোয়ানো থেকে বিরত থাকুন এবং এই কাজটি আপনি নিজেই করুন। এই কাজটি কোন রাস্তা বা সংযোজক সড়কে করতে যাবেন না যেহেতু এটি বিপদজনক। কোন লং ড্রাইভের পরও সাথে সাথে ধুতে যাবেন না।

বাইকটিকে ঠান্ডা হওয়ার জন্য সময় দিন, কারণ আপনি অবশ্যই গরম ইঞ্জিনের মধ্যে ঠান্ডা পানি দিয়ে স্প্রে করতে চাইবেন না। দিনের মধ্যভাগে বা সরাসরি সূর্য্যের আলোতে ধোয়া বর্জন করুন যেহেতু তাপের কারণে ডিটারজেন্ট বাইকের উপরিভাগেই শুকিয়ে যায়।

পানিতে দূষণকারী পদার্থ যেমন মিনারেল ডিপোজিট খুবই বিপজ্জনক যখন এটি গরম থাকে, যদি কোন গরম বাইকে এই পানি স্প্রে করা হয় তাহলে এই পানির দাগ উঠাতে খুব কষ্ট হয়।

Related মোটরসাইকেল চালানোর কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ,নূতনদের জন্য

৩. ঘনঘন ধোন কিন্তু অতিরিক্ত ধোবেন না-

এটা হল কিছুটা ব্যালেন্সিং পদ্ধতি। ঘনঘন ধোয়া আপনাকে গঠনগত সমস্যা যেমন ফ্লুইড লিক, কোন অংশ হারানো বা নষ্ট হওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে তাড়াতাড়ি সতর্ক করবে। আপনার চিত্রকর্মে অতিরিক্ত পরিমাণ পোকার বসবাস বেশিদিন থাকলে পরে এগুলো দুর করা খুব কষ্টকর হয় এবং খারাপ দেখা যায়। এমনকি আপনার রেডিয়েটরেও যদি পোকামাকড়ে ঠাসাঠাসি থাকে তাহলে এর জন্য ওভারহিটিং জনিত সমস্যা হয়।

যদি আপনি দ্রুত ধৌত করেন, আপনি ক্যাবলগুলো থেকে লুব্রিকেন্ট অপসারণ করতে পারবেন এবং পুরাতন ইঞ্জিনকে গ্রীস থেকে রক্ষা করতে পারবেন। আপনার বাইকটি যদি কাদা দিয়ে ভরপুর থাকে আর আপনি যদি এগুলোকে ব্রাশ দিয়ে তুলতে না পারেন, তাহলে আপনার এটিকে সম্পূর্ণরুপে ধোয়ার প্রয়োজন হবে।

আর আপনার বাইকে যদি এত পরিমাণ ময়লা না লাগে তাহলে এটিকে ওয়ান্ডস্ক্রীন অথবা বডিওয়ার্ক স্প্রে ও নরম কাপড় দিয়ে ভাল ভাবে মুছে দিন।

Related কোন সাইজের বাইসাইকেল আপনার দরকার

৪. পানি ও অন্যান্য মানানসই জিনিস দিয়ে ধৌত করুন

খুব বেশি পরিমাণ পানি ব্যবহার করবেন না। এই কাজের জন্য সঠিক ক্লিনিং প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন। প্রত্যেক ধরনের ব্যবহারের জন্যই আলাদা আলাদা প্রোডাক্ট আছে। কিন্তু পালিশ করার ক্লিনার বা গৃহস্থালিতে সাধারণ উদ্দ্যেশ্যে ব্যবহৃত ক্লিনারগুলো ব্যবহার করা থেকে সতর্ক থাকুন কারণ এগুল চিত্রকর্মের ক্ষতি করে।

ডিটারজেন্টের ছয় এবং আটের মাঝে একটি pH ব্যালেন্স আছে, তাই এটি অ্যাসিডিকও নয় এবং অ্যালকালাইনও নয় যা আপনার পেইন্টের ক্ষতি করতে পারে। পরীক্ষা করে দেখুন যে এটি সব ধরনের চিত্রকর্মেই ব্যবহারের উপযোগী আছে কিনা। সিটের মধ্যে ভিনাইল ক্লিনার ব্যবহার করবেন না কারণ এটি উজ্জ্বল দেখালেও পিচ্ছিল।

আপনি যদি কোন কঠিন কাজ ঠেকানোর জন্য কোন শক্ত জিনিষ ব্যবহার করেন তাহলে আপনার সম্ভবত হাতে পরার জন্য রাবার গ্লাভস ব্যবহার করলে ভাল হবে। 

Related মোটর বাইক কেনার পরামর্শ বা নির্দেশিকা

৫. হাই প্রেশার ক্লিনিং

এটি শক্তভাবে লেগে থাকা কাদা বা কঠিন চর্বি উঠানোর ক্ষেত্রে খুব ভাল কাজ করতে পারে, কিন্তু এর ফলে বৈদ্যুতিক অংশগুলোতে পানি ঢুকে যার কারণে ক্ষয়ের সৃষ্টি হয় অথবা কমপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলোর ক্ষতি হয়। যদি কোন হাঁই প্রেশার ক্লিনার ব্যবহার করেন তাহলে এটিকে যন্ত্রাংশ, ইলেক্ট্রনিক্স, চেইন, এবং ভিনাইল সিটের থেকে দূরে রাখুন যা প্রেসারাইজড পানির কারণে ছিরে যেতে পারে।

বডিওয়ার্কে ও হুইলে মনোনিবেশ করুন। প্রেশার ক্লিনার চেইন থেকে কাদা অপসারণ করতে খুবই ভালভাবে কাজ করবে, কিন্তু আপনার পরবর্তীতে চেইনটিকে পুনরায় রি-গ্রীস করতে হবে। আপনি যদি প্রেশার ক্লিনার ব্যবহার করেন তাহলে Karcher K2.180 এর মত ঘরোয়া জিনিস ব্যবহার করুন যা অতিরিক্ত পাওয়ারফুল নয়। এটি ২০০০psi এর বেশি নয়।

এগুলো কম পানি ব্যবহার করায় পরিবেশবান্ধবও।

Related মোটর সাইকেলের মাইলেজ পাওয়ার 10 টি কার্যকরী টিপস

৬. আপনি সঠিক স্পঞ্জ, ন্যাকড়া, ব্রাশ ব্যবহার করছেন কিনা নিশ্চিত হোন।

আলাদা আলাদা জায়গার জন্য পৃথক পৃথক ন্যাকড়া ও স্পঞ্জ ব্যবহার করুন। হুইলের গ্রীস পরিষ্কার করার জন্য স্পঞ্জ ব্যবহার করবেন না কারণ আপনি পরবর্তীতে সিটের জন্য এই একই স্পঞ্জ ব্যবহার করবেন যার জন্য সিটের সাথে গ্রীস লেগে যাবে। অনেক ধরনের আধুনিক পরিষ্কার করার উপাদান সহজলভ্য।

ছোট আশজাতীয় কাপড়গুলো এই কাজের জন্য খুবই কার্যকর যেগুলো উপরিভাগও রক্ষা করবে। কিন্তু খুব দঃসাধ্য জায়গা যেমন রেডিয়েটর অথবা ফিতাওয়ালা চাকা থেকে ময়লার কণা বের করে আনার ক্ষেত্রে টুথব্রাশের কার্যকারিতাকেও ছোট করে দেখবেন না।

Related মোটরসাইকেল বা গাড়ী এর মাইলেজ হিসাব করার সহজ উপায়

৭. সম্পূর্ণ জিনিসের প্রতি মনোনিবেশ করুন

যখন আপনি ওয়াশিং ও পালিশিং করা করা শেষ করে ফেলবেন তখন বাইকের চতুর্দিকে ঘুরে দেখুন। ক্যাবলগুলোকে মুছুন, ইঞ্জিনের ক্যাসিং পরিষ্কার করুন, চাকার মধ্যভাগে ঘষুন, এবং মাটিতে শুয়ে ভালভাবে দেখুন আপনই কোন অংশ বাদ দিয়েছেন কিনা। আপনই যদি কোন প্রদর্শনীতে যান তাহলে শুধু আপনার টায়ার ওয়ালে টায়ার শাইন ব্যবহার করুন, অন্যথায় অধিক পরিমাণ স্প্রে পা রক্ষার যায়গায় যাবে এবং চাপ প্রয়োগে বিরূপভাবে প্রভাব ফেলবে।

৮. বাইককে ভাঙতে অথবা জোড়া লাগাতে ওয়াক্সিং করুন

কাটার যন্ত্রপাতি ব্যবহার করবেন না যেহেতু এগুলোর জন্য চিত্রকর্মে স্থায়ী দাগ বসে যেতে পারে। কোমল মোম ব্যবহার করুন যা কোন স্তর মুছে ফেলার পরিবর্তে নতুন স্তরের তৈরি করে। কিছু আধুনিক বাইক মূলত প্লাস্টিক অথবা বার্ণিশের স্তর দিয়ে আবৃত করা হয় যা সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

ভাল কোয়ালিটির মোম সানস্ক্রিনের মত কাজ করবে, এবং আপনার চিত্রকর্মকে রক্ষা করতে UV প্রতিবন্ধক তৈরি করবে। এই ধরনের সুরক্ষার জন্য নিয়মিত ওয়াক্সিং করা ভাল। পালিশটিকে সরাসরি বডিওয়ার্কের উপর না রেখে একটি পরিষ্কার ন্যকড়ার উপর রাখুন। শুকিয়ে গেলে মোমের মিশ্রণকে তিসি বিহীন কাপড় দিয়ে উঠিয়ে ফেলুন।

৯. WD40

অতিরিক্ত পানি ব্যবহার থেকে বাঁচার জন্য ও লেগে থাকা গ্রীস ভালভাবে উঠানোর জন্য এটি একটি ভাল পদ্ধতি। ক্যবল, কবজা, লিভার ইত্যাদি যেগুলো ধোয়ার পর লুব্রিকেট হারিয়ে ফেলে সেগুলো রীগ্রীসিং করার জন্যও এটি একটি ভাল পদ্ধতি। চেইনটিকে আচ্ছাদিত করার জন্য ওয়াক্স স্প্রে বাঁ চেইন লিউব ব্যবহার করুন এবং এগুলোর গায়ে লেখা নির্দেশ অনুসরণ করুন।

১০. শেষ স্টেপ হল শুকানো

যখন আপনি সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ করে ফেলবেন তখন বাইকটিকে আস্তে আস্তে চালান, অতিরিক্ত পানি বের করে ফেলার জন্য আস্তে আস্তে ব্রেকগুলো চাপুন। এরপর গভীর গর্ত ও ক্রেনগুলো থেকে পানি শুকানোর জন্য বড় রাস্তায় একটি লং ড্রাইভ করে আসুন।

যদি এইসব জায়গায় পানি থাকে তাহলে দুর্ঘটনার সৃষ্টি হতে পারে। এরপর বাড়িতে ফিরে আসার পর একটি ছোট আশজাতীয় ন্যাকড়া দিয়ে ওয়াইন্ডস্ক্রীন ও বডিওয়ার্কে লেগে থাকা দাগগুলো মুছে ফেলুন।

Join the discussion

17 thoughts on “মোটরসাইকেল ধৌত করার সর্বোত্তম ১০টি টিপস।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।