ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ রিভিউ

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ রিভিউ

 

ইয়ামাহা  আর ১৫  ভি ২.০ ইদানিং বাজারে এসেছে যেটি সাধ্যের মধ্যে প্রথম স্পোর্টস বাইক বাংলাদেশে । ইয়ামাহা এর  এই আর সিরিজের এটি সবচেয়ে মুল্যবান বাইক আর এটি এর দ্বিতীয় সংস্করণ  আর ১৫ ভারসান ২.০। ২০১৬ সালে ইয়ামাহা  আর ১৫ ভি ২.০ এর তিনটি নুতন শেড বাজারে এনেছে -সেগুলি হল রিভাইভিং ব্লু, এড্রেনালাইন রেড, স্পার্কি গ্রিন।

Yamaha-YZF-R15-v2.0-productreviewbd

ইয়ামাহা আর ১৫ ভারসান ২.০ এর ফিচার সবগুলি নুতন , এর অ্যালয় হুইল এর নুতন ডিজাইন, স্প্লিট সিট , নুতন গ্রাফিক, আরও মোটা টায়ার ১৩০/৭০ -আর১৭, ভাল ব্রেকের জন্য বড় ২২০ মিমি. রিয়ার ডিস্ক,এলইডি টেইল  ল্যাম্প যা ২০১০ সালের ওয়াইজেডএফ -আর ১৫ এর চেয়ে দেখতে সুন্দর আর এটি অনেক বেশী জ্বালানি সাশ্রয়ী কারণ নুতন ইসিইউ ম্যাপিং ।

ভাল দিক

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ দেখতে ভীষণ স্পোর্টি সাথে রয়েছে বড় টায়ার আর ডিস্ক।

এর সৌন্দর্য আর এর পারফরমেন্স এর জন্য এটি অতি নিমিষেই বিক্ষ্যাত হয়ে উঠেছে আর প্রতিযোগিতার বাজারে স্থান করে নিয়েছে।

নুতন অনেক ডিজাইন যোগ হয়েছে এর সাইলেন্সার ও এক্সজস্ট পাইপের জন্য।

 

খারাপ দিক

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ অনেক দামি স্পোর্ট বাইক।

বড় টায়ার আর গাড় ব্যাক লাইট  ছাড়া তেমন কিছুই আগের ভারসান হতে আলাদা নয় ।

আগের তুলনায় ওজন ৫ কেজি বেশী । এখন এর ওজন  ১৩৫ কেজি।

 

[wp-review id=”2115″]

Rating: 8.4 out of 10

ডিজাইন ও স্টাইল

 

হ্যাঁ, আর ১৫ এ ইয়ামাহা বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছে । কিন্তু আপনি যদি এর সামনে তা খুজতে থাকেন তাহলে পাবেন না। নজরে আসার মতো আছে  চওড়া সামনের টায়ার আর গাড় লাইট । এছাড়া সবকিছুই আগের ভারসানের মতো। কিন্তু আপনি যখন এর সাইডে যাবেন তখন এর বড় বড় পরিবর্তন গুলি দেখতে পাবেন যার কারনে এই বাইক অনেক বেশী স্পোর্টি । মধ্যের ফুল সাইজ কোলিং ফেয়ারিং পুনঃ ডিজাইন করা হয়েছে যাতে এরোডায়নামিক্স আরও উন্নত হয় আর আপনি এটি আরও ভালভাবে চালাতে পারেন।

yamaha-y-zf-r15-version-2

পিছনের এলুমিনিয়াম সুইং আরম আপনাকে নজরে আনতেই হবে এই বাইকে নুতন সাইলেন্সারও রয়েছে যা কার্বন ফিনিশিং করা আর নেইম প্লেট এর উপরে ।  এর পিছনের  অংশটাই দেখতে অনেক স্মার্ট আর এর প্রতিজোগী বাইকগুলির তুলনায় অনেক স্পোর্টি । ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ এর  ১৩০/ ৭০ মোটা টায়ার অনেক উন্নত আর এটি এই বাইকে খুব বেশী দরকার ছিল।

এর রয়েছে নুতন ডিজাইনের স্প্লিট সিট গার্ড আর মাড গার্ড । তবে  ত্রিভুজ এলইডি টেইল লাইট আরও ভাল হতে পারত। এর টেইল কোল অনেক আকর্ষণীয় ।

 

ইঞ্জিন ও গিয়ার বক্স

 

এই ক্ষেত্রে এই বাইকের তেমন কোন পরিবর্তন হয়নি । ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ লিকুইড ডাণ্ডা ৪ স্ট্রোক ১৪০.৮ সিসি ইঞ্জিন সমৃদ্ধ । এর রয়েছে মোনোসিলিন্ডার , ৪ ভাল্ভ, এসওএইচসি ইঞ্জিন যা ৮৫০০ আর পি এম  এর ১৬.৮ বি এইচ পি শক্তি উৎপাদন করে আর টর্ক হল  ৭৫০০ এরপিএম এতে ১৫ এন এম  । ইঞ্জিনটিতে রয়েছে ৬ টি স্পীড সমৃদ্ধ গিয়ার বক্স যা এক গিয়ার নীচ আর ৫ গিয়ার উপরে উঠানর শিফট প্যাটার্ন রয়েছে।

 

একসিলারেটর ও পারফরম্যান্স

 

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ এর আগের মডেলের মতই কম বেশী সব কিছু। ইয়ামাহা এর ইঞ্জিনটি একটু পরিবর্তন করেছে যা প্রায় দেখা কষ্ট কারণ ৪ কেজি ওজন যোগ হওয়ার কারনে। এর প্রাথমিক গিয়ার এটিকে প্রতিদিন ব্যবহারের উপযোগী করে তুলেছে। আপনি যদি ৬০০০ আর পি এম এর উপরে চালান তখন এটি ধীর গতি হতে পারে। তবে ৮০০০ আর পি এম পর্যন্ত ভাইভ্রেসান হবে না আর রিফাইনমেন্ট লেভেলও সন্তুষ্টিজনক।

yamaha-y-zf-r15-version-2-wheel

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০  বাইক অনেক দ্রুততর আর ০-১০০ কিমি / ঘণ্টা স্পীড বাড়াতে পারবেন মাত্র ১৩ সেকেন্ড এর মধ্যে। এই বাইকে আপনি সরবোচ্চ ১৩০ কিমি / ঘণ্টা পর্যন্ত স্পীড বাড়াতে পারবেন আর এর আরোহী যদি এটিকে এত স্পিডে  চালান তবে এটা এর প্রতিযোগী বাইকগুলির মতই। তবে এর হাই এন্ড পারফরমেন্স বাজাজ পালসার ২২০ বা হোন্ডা সিবিআর ২৫০ আর এর কাছাকাছি নয় ।

মাইলেজ

শহরে আর ১৫  রেঞ্জের বাইকের মাইলেজ ৩০-৩৫ কিমি/ লিটার আর হাইওয়েতে প্রায় ৪০-৪৫ কিমি/ লিটার ।.

 

ইন্সট্রুমেন্ট কনসোল

 

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ এর আগের ভারসানের মতই এর ইন্সট্রুমেন্ট কন সোল। এর অ্যানালগ টেকো মিটার  এর জন্য একটি গোল পাত্র আছে যদিও এর একটি ডিজিটাল স্পিডোমিটার , ফুয়েল গেজ  ও   এলইডি সহ  অডোমিটার   রয়েছে। এর ব্লু ব্যাক লাইট রাতের বেলায় আরও গাড় লাগে দেখতে।

 

চড়তে আরাম

 

ইয়ামাহা আর ১৫ এর স্পোর্টি  প্রকৃতির জন্য খুব পরিচিত আর এটি একটি প্রিমিয়াম বাইক যা আগে ছিলনা। এর এক্রোডায়নামিক ডিজাইনের জন্য এর চালক একে সামনের দিকে বেন্ড করতে পারবেন তার হাঁটু ঠিক ভাবে রোল ব্যাক করে। ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ এর  সিট টিকে নিচু করে শক্ত ভাবে এর ব্রেক কে কনট্রোল  করা  যায় যা এর আরোহীকে দেবে অনেক বেশী আত্মবিশ্বাস রাস্তায় চলার জন্য  আর এই বৈশিষ্ট্যটি পালসার বা হিরো কারিজমা জেড এমআর এ নেই।

 

নুতন এই সিট গুলি ভীষণ আরামদায়ক আর এর পায়ের পাতা রাখার জায়গাটি স্বাভাবিকের চেয়ে একটু পিছনে আর আরামদায়কও বটে। হাতের ক্লিপ গুলি ধরতে আরাম আর সহজ আর আপনি যখন এই বাইক চালাবেন আপনার অনুভুতি হয়ে অকল্পনীয়।

নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য

 

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ এর দুইটি হেড লাইটের কারনে  বাইক চালক রাতে সবকিছু খুব পরিষ্কার দেখতে পাবেন  যা নিরাপদ ড্রাইভিং এর জন্য খুব জরুরী।

 

সাস্পেন্সান

ইয়ামাহা আর ১৫ ভারসান ২.০ র সামনে  আছে  টেলিস্কপিক ফরক যা এর পিছনের মনোসকার এর সাথে যুক্ত।  উঁচু নিচু তে এটি চালনা অনেক সহজ আর অনেক সহজেই স্পীড ব্রেকার ক্রস করা যায় । এর সাস্পেন্সান সিস্টেম এর জন্য এর উঁচু সিটের উপর বসে বাইক চালানো অনেক আরামদায়ক আর চাপ মুক্ত।

 

ব্রেক

 

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ বাইকের ব্রেক সিস্টেম উন্নত করা হয়েছে  দুই হুইলেই আরও বড় ডিস্ক দিয়ে। এর রয়েছে ২৬৭ মিমি. ডিস্ক ব্রেক যা পিছনের ডিস্ক  ব্রেক হল ২২০ মিমি.  । আর বড় ডিস্কের কারনে  ব্রেক অনেক বেশী নিরাপদ বাইক চালনা নিশ্চিত করেছে।

 

রাইড  ও হ্যান্ডলিং

 

ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ এর চওড়া হুইল বেইজ  (১৩৪৫ মিমি.) ,  মোটা টায়ার,  পিছনের এলুমিনিয়াম সুইং আরম এর কারনে নুতন এর চালককে অনেক বেশী আত্মবিশ্বাসী আর গতিময় করে তুলবে।  এর নিখুঁত সাস্পেন্সান  ১৬০ মিমি. এর গ্রাউন্ড কিলিয়ারেন্স আপনাকে একটি নিরাপদ আরামদায়ক বাইক চালানোর অভিজ্ঞতা  দেবে । হালকা ও সঠিক হ্যান্ডলিং এর অন্য একটি বড় বৈশিষ্ট্য।  ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ অত্যন্ত সুন্দর , স্পিডি  একটি বাইক ।

 

শেড

২০১৬ এর ইয়ামাহা অয়াই জেড এফ – আর ১৫ ভারসান ২.০ তিনটি নুতন রঙ্গে আছে – রিভাইভিং ব্লু, এড্রেনালাইন রেড, স্পার্কি গ্রিন।

 

শেষ কথা

 

ইয়ামাহা আর ১৫ ভারসান ২.০ আগের যেকোন বাইকের চেয়ে অনেক বেশী স্পোর্টি আর এটাকে চালনা একটি বিশাল আনন্দ এর চালকের জন্য। এর অল্প শক্তির  ইঞ্জিন ছাড়া আর কোন দুর্বলতা নেই। এর ছোট  ইঞ্জিনের সত্তেও এর মুল্যটি  বেশ ভাল আর হোন্ডা সিবিআর ১৫০ আর এর তুলনায় একধাপ এগিয়ে কারণ হোন্ডা আর ১৫ এর তুলনায় দামী।

এটা ইয়ামাহা  এর একটি দারুণ অফার আর এই ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ স্পোর্ট বাইক হিসেবে এই  বাইক ক্রয় অবশ্যই একটি সঠিক সিদান্ত।

Join the discussion

One thought on “ইয়ামাহা ওয়াই জেড এফ- আর ১৫ ভারসান ২.০ রিভিউ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।